ফোন

আচ্ছা বলোতো দেখি, মনে আছে কিনা
আমার শরীরের কোথায় তুমি ছুঁলে বা বলা ভালো
চুমু খেলে আমি ফনা তোলা বিষাক্ত সাপের মতই
রসবতী হয়ে ঢলে পড়তাম তোমার কোলে?
বলিনা কিছু। ও বলে, জানি সে সব তোমার
মনে নেই আজ।
বলি না, কোন দিনই এই সহজ কারসাজী
আমি বুঝি নি। সত্যি। আজ দুপুরের তপ্ত রোদে
সবে ফিরে বসেছি আফিসে। ফোন এলো।
বহু দিনে ধূসর কোন রিনিঝিনি গলা ধীর লয়ে
কথা বলে, চিনেছ?
চিনে বললাম, এই নম্বর কোথায় পেলে?
তোমার বহু দিনের বন্ধু, তা বেশ বছর তিরিশ আগে
সেই ছিল ভীষণ আপন, সবে ধন নীল মনি, এখন
কানাডায় থাকে
তার কাছে পেলাম তোমার খোঁজ, জানতে চাই
তুমি কোথায়। উত্তর, ঢাকার উত্তরায়।
আমি দিলকুশা
আহারে তিরিশ পচিঁশ বছর আগে, আমি তখন
বাইশ বা পচিঁশ
কিছু মনে নেই, মনে রাখতে নেই, সেই
রাতের ফেরিতে পদ্মা পাড়ি, ছলাৎ ছলাৎ ছন্দে
ইলিশ মাছের ঝাল ঝোল খেয়ে আড়ালে এসে
অকাতরে ঠোটে ঠোট দিয়ে বসে থাকা
দাঁড়ানো বাসের আধার ঘন সিটে,
সত্যি মনে নেই।
তখন টেলিফোন, বুথ থেকে, দু শ, তিন শ টাকার
কথা বলা একবারে। বেচারা বুথওয়ালাকে যে দিন
আমায় নিয়ে দেখালে, এই যে সেই লোক যার সাথে এখান এসে
বাড়ী থেকে পালিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলি, ও বলেছিল, ’ভাই
বিয়া কইরেন এই আপারেই।’
কতদিন সে কথা ভূতের স্বপনের মত তাড়া করে ফিরেছে রাত দিন
আমার থাকার ঘরে তোমার ভিজে চুল ভিজে গা আর আমার আবদার
তোমার শরীরে তখন আতব আতব ঘ্রান, ম্লান আলোয় অন্য রকম
পৃথিবীতে হারিয়ে যাওয়া
তাকে তখন বলা হয়নি, এ আপা বিবাহিতা। শুধু অভিসার শেষে
ফেরবার পথে হাত ধরে কেঁদে বলেছিলাম, ওকে ছাড়ো, আমায়
বিয়ে কর।
সেই দিন থেকে, তুমি বলেছিলে ঐ বুথে তোমার জন্যে
প্রতি মিনিট বারো আনা।
হ্যালো
আমি বলি
হ্যালো হ্যালো হ্যালো
শোনা যাচ্ছে না, এখন রাখি

Comments