ফুল ফুটুক না ফুটুক ...


তোর বাড়ীর দেয়ালটা, টেবিলটা

টান টান করে বেছান চাদর, তোদের কলতলা,

তোর মায়ের গায়ের হালকা রঙ্গের শাড়ীর পাড়

সব মনে পড়ে গেল……… 

খোকন, কোথা যাস বাবা,

তোরা কিছু খেয়ে যা, না খালা বাইরে খাবো

বাইরে তখন ঔড়েদের ছাতু কিংবা রাধাবল্লভী

সেও ছিল বেশ

এমনতর মেকী শীতল ঘরে বসে

শরু চালের ভাত, চিতল মাছের পেটি? এই কী চাওয়া,

প্রভূ ভুল শুনেছ, আমি চেয়েছি কাঠ ফাটা রোদে

তিনটে ফুলকোলুচি, একটু বেশী আলু কষা,

প্রাচীর পাশের ফুটপাথে.

ঠিক দুপুরে সে কথা খাটে না, চাট্টি খেতে হয়

মধ্যবৃত্ত মানুষ, রোজ মাছের ঝোল বা গোস পড়েনা পাতে

গোর্বাচেভ তখনো রাশীয়া ভাঙ্গেনি

রাশান সাহিত্যের চেকভ তখন সাড়ে সাত টাকা

মুসলমান, গরু গোস খাই, বার টাকা কিলো

তাও হপ্তায়ে ক’বার

চার কামরার নিজের বাড়ী, ছাদে টিন ছাওয়া

একটাই করপোরেশনের টাট্টি

কলতলাও একটাই, একটা, রান্নার ঘর, তারি সুমুখে

মাদুর পেতে খাওয়া, মেহান এলে

খাটের নিচ থেকে টেনে বের কবা রড়ের টি-টেবিল

প্লাস্টিকে বোনা, শোয়ার তথা বসার ঘরে।

তাতেই আট ভাই বোন, দুটো চাচা চাচী, সুস্থ দাদী

আত্মীয় স্বজন, মুখের খাজে হাসি, ছোট মামা এলে,

ঈদ এসে যায়, বড় মামা রাশভারী মাষ্টার,

চার খালার পাত্র সব, এখানেই দেখা। যাহ!

তোর বাড়ী আমার বাড়ী একি সাথে হয়ে গেল

তা হোক, সব তাতেইতো এক ধরা হতো, শুধু তোরা 

কিছু বড়লোক, তোর বাপ চাকরিজীবি,

আমাদের বাপের দর্জী দোকান।

বিল্ডারদের বদ্যান্যতায়, তোর বাপের

ভাগে তিনটি ফ্লাট, তিন কাটা জমির ষোল ভাগের এক ভাগ 

গোস্ত এখন .

ছেলের সাবান মেয়ের সাবান, ও সাবানে আমার

র‌্যাশ ওঠে গায়ে, তেল-শ্যাম্পূ সব আলাদা

যে যার ঘরে শুয়ে শুয়ে আজ সকালে ভাবি

আমরা কি তবে শুধুই মানুষ, তার বেশী কিছুই নই।
রাশান বই গুলো আজ দশ ডলারেরও বেশী দাম।

Comments